সরিষাবাড়ীতে বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় রাজাকারের নাম অর্ন্তভুক্তি’র অভিযোগ
তৌকির আহাম্মেদ হাসু , সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি ঃ
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে বীর মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় এক রাজাকারের নাম অর্ন্তভুক্তি’র অভিযোগ পাওয়া গেছে।এ অভিযোগ করেছেন সরিষাবাড়ী উপজেলার ৩নং ডোয়াইল ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব ফজলুল হক।তিনি বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রানালয়,ঢাকা এর সচিব বরাবর বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব ফজলুল হক স্বাক্ষরিত ২০২১ সালের ৩১ শে জানুয়ারী একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
এ ছাড়াও অভিযোগের বিষয়ে মহা পরিচালক জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল কাকরাইল ,ঢাকা,জেলা প্রশাসক জামালপুর,উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ,সরিষাবাড়ী ও উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা বরাবর অনুলিপি দিয়েছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব ফজলুল হক স্বাক্ষরিত অভিযোগ পত্রে উল্লেখ.সরিষাবাড়ী উপজেলার ৩ নং ডোয়াইল ইউনিয়নের দোলভিটি গ্রামের মৃত রুস্তম আলী মুন্সী’র ছেলে গিয়াস উদ্দিন ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধের পূর্বে মুসলিম লীগ নেতা রিয়াজ উদ্দিন(সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান) এর অর্শ্ব পালক হিসেবে কাজ করতেন।তাকে মুক্তিযুদ্ধের পূর্ব মুহুর্তে তৎকালীন ডোয়াইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এর সুপারিশক্রমে আজিমপুরের এক বিহারীর বাসায় কাজ করার ব্যাবস্থা করে দেন।কাজ করাকালীন ১৯৭১ সালের আগষ্ঠ মাসের মাঝামাঝি সময়ে ওই বিহারী অফিসারের বাসায় কর্মরত থেকেই ১৯৭১ সালের১৭ আগষ্ট তারিখে শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান সেকান্দার আলী’র লিখিত সুপারিশ পত্রে অনুযায়ী রাজাকার হিসেবে নিয়োগ পেয়ে যোগদান করেন। তার কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও স্ব শিক্ষিত হয়ে লেখা পড়া করতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের অব্যবহিত পরে অর্থাৎ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি আতœগোপনে চলে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সনদ সংগ্রহ করে বাংলাদেশ জাতীয় রক্ষিবাহিনীতে যোগদান করেন। তিনি ১৯৮৭ সালে অবসর গ্রহন করলেও ২৫/১০/২০০৩ তারিখে সেনাবাহিনীর গেজেটে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেট ভুক্ত হয়। তার পর মুক্তিবার্তায় সু-কৌশলে অর্থের বিনিময়ে নাম অর্ন্তভুক্তি করেন। এর পর ২৩/০৫/২০০৫ ইং তারিখে বে-সামরিক গেজেটে ১০০৫নং ক্রমিকে গেজেটে আর্ন্তভুক্ত হয়।
এ ছাড়াও সরকার ও কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে জারীকৃত গেজেটে
অর্ন্তভুক্ত হয়ে মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা সহ সরকার দেয় সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আসছেন। গিয়াস উদ্দিন এর মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় বিবরণীতে ১১ নং সেক্টরের মহেন্দ্রগঞ্জ(ভারত) প্রশিক্ষন গ্রহন করেছেন বলে উল্লেখ রয়েছে।কিন্তু গিয়াস উদ্দিন এর বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ, গিয়াস উদ্দিন ভারতে প্রশিক্ষন গ্রহন করেননি। অভিযোগ কারী আলহাজ্ব ফজলুল হক আরোও উল্লেখ করেছেন যে ও ডোয়াইল ইউনিয়ন বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকাতে গিয়াস উদ্দিন এর নাম নেই। সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা যাচাই –বাছাই অভিযোগ তালিকায় তার নাম অর্ন্তভুক্ত ছিল এবং তাকে নোটিশও করেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি। কিন্তু আগামী ০৬/০২/২০২১ তারিখ যাচাই বাছাই অভিযোগ তালিকায় তার নাম না থাকায় ডোয়াইল ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ডোয়াইল ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধাগন আগামী ০৬/০২/২০২১ তারিখ যাচাই বাছাই তালিকায় গিয়াস উদ্দিন এর নাম অর্ন্তভুক্ত করে পুনাঙ্গ যাচাইয়ের প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন তারা।
এ ব্যাপারে গিয়াস উদ্দিন এর কাছে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মোবাইল ফোন করলে তিনি জানান,আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং অবসর সৈনিক। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য দোলভিটি গ্রামের মোজাম্মেল হক এর ইন্ধনে মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক উঠে পড়ে লেগেছে। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পুর্ন মিথ্যা ও ভিক্তিহীন।