সরিষাবাড়ীতে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্লিপ এর টাকা কাগজ কলমে বাস্তবায়ন ॥ আত্মসাৎ এর অভিযোগ
তৌকির আহাম্মেদ হাসু ,সরিষাবাড়ী( জামালপুর)প্রতিনিধি ঃ
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় স্লিপ এর টাকা হরিলুট। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ৩০ জুন ২০১৯ এর মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেরামত-সংস্কার ও বায়োমেট্রিক মেশিন কেনার কথা থাকলেও তা এখনো করা হয়নি। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো মেরামত- সংস্কার না করে শিক্ষকদের বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন না কিনে কাগজে-কলমে এ বাবদ খরচ দেখিয়েছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.আঃ হালিম ।
জানা যায়, চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সভায় দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেরামত-সংস্কার ও শিক্ষক উপস্থিতি শতভাগ নিশ্চিত করতে বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জেলা উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে মেরামত-সংস্কারের কাজ ও কর্মরত শিক্ষকদের জন্য বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন কেনার উদ্যোগ নেয়া হয়।তা জুন মাসের মধ্যে এসব বিদ্যালয়ের জন্য মেরামত-সংস্কারের কাজ ও হাজিরা মেশিন ক্রয় সম্পন্ন করার জন্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ছিল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা করতে ব্যর্থ হয় সরিষাবাড়ী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.আঃ হালিম । জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সরিষাবাড়ী উপজেলা ১ শত ৩৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্লিপ এর বরাদ্দ পেয়েছে। যেসব বিদ্যালয়ের ছাত্র/ছাত্রীর সংখ্যা ২শ এর কম তাদের জন্য ৫০ হাজার টাকা,আবার যাদের ছাত্র/ছাত্রীর সংখ্যা ২শ এর বেশি তাদের ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এ বরাদ্দ থেকে প্রতিটি বিদ্যালয়ের জন্য মেরামত-সংস্কার ও বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন ক্রয়ের নির্দেশনা দেয়া হয়। কাগজ-কলমে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের হাজিরা মেশিন ও মেরামত-সংস্কারের কাজ করা হয়েছে মর্মে এরই মধ্যে খরচ দেখানো হয়েছে। কোন প্রকার কাজ না করেই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার যোগসাজশে এ বাবদ ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকার খরচের ভাউচার ধরিয়ে দিয়েছে স্কুল প্রধানরা।
দেখা গেছে, মেরামত-সংস্কারের কাজ ও হাজিরা মেশিন ক্রয় সংক্রান্ত যে ভাউচার এরই মধ্যে তৈরি করা হয়েছে তাতে কোনো কোনো বিদ্যালয়ে ৫০ হাজার টাকা আবার কোনোটিতে ৭০ হাজার টাকা উল্লেখ্য করা হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত উপজেলার কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংস্কার ও মেশিন লাগানো হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরিষাবাড়ী উপজেলার একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ের মাধ্যমে আমাদের কাছ থেকে মেরামত- সংস্কারের কাজ ও হাজিরা মেশিনের জন্য ভাউচার নেয়া হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত হাজিরা মেশিন বিদ্যালয়গুলোতে আসেনি। প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে হাজিরা মেশিন কেনার কথা থাকলেও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় তা না করে মেশিন কেনা সংক্রান্ত ব্যয় আগেই কাগজ-কলমে দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করে পছন্দসই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কেনার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।
এ ব্যাপারে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেরামত-সংস্কারের কাজ ও হাজিরা মেশিন এখনো না কেনার বিষয়টি জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.আঃ হালিম,কোন কথা না বলার অনিচ্ছুক প্রকাশ করে ।