উল্লাপাড়ার নীচু অঞ্চলে আধুনিক ছোয়ায় বদলে যাচ্ছে গ্রামীণ চিত্র
মোঃ আব্দুস ছাত্তার, উল্লাপাড়া থেকেঃ
পরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মকান্ডে স্বল্প সময়ের মধ্যেই উল্লাপাড়ার নীচু অঞ্চলে আধুনিক ছোয়ায় বদলে যাচ্ছে গ্রামীণ চিত্র । এ উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে শুরু করে প্রতিটি গ্রামেই নির্মিত হয়েছে আধুনিক অসংখ্যা পাকা রাস্তা- ঘাট ,ব্রীজ-কালভার্ট । ওই নীচু অঞ্চলের ফসলের মাঠের বুক চিরে নির্মিত হয়েছে কনর্কিটের আধুনিক সাবমার্জিবল রাস্তা ।
এ রাস্তা দিয়ে চলছে আধুনিক সবধরনে যানবাহন। রাস্তা-ঘাট,ব্রীজ-কালভার্টের উন্নয়নের ফলে নীচু অঞ্চলের গ্রাম-গঞ্জ থেকে মানুষ দ্রুত যানবাহনে চড়ে শহর-গঞ্জে যাতায়াত করতে পারছে । কৃষকরা তাদের খামারে উৎপাদিত দুধ সহ কৃষি পণ্য মিল কারখানা,হাট- বাজারে দ্রুত আনা নেয়া করতে পারছে । একযুগ আগেও ওই সব অঞ্চলের মানুষগুলোর কাছে ছিল দুঃস্বপ্নের মতো । বর্তমান সরকার আমলে স্থানিয় সংসদ সদস্য জনাব তানভীর ইমাম এর দিকনির্দেশনায় এ উপজেলার প্রতিটি এলাকাতেই এমন পরিকল্পিত রাস্তা-ঘাট,ব্রীজ কালভার্টের উন্নয়নে মানুষের জীবনে পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে । গ্রামে বসেই মানুষ পাচ্ছে শহরের সকল সুযোগ সুবিধা। উল্লাপাড়া উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১৭ কিঃমিঃ দক্ষিণ -পশ্চিমে মোহনপুর ইউনিয়নের কালিয়াকৈড় ও সুজা গ্রাম । বন্যা কবলিত চলনবিল অধ্যুষিত দূর্গম এ গ্রাম দুটি কৃষি ও গবাদিপশু সমৃদ্ব। এখানে প্রায় ৭ হাজার মানুষের বসবাস। যাতায়েত বলতে এখানে মাত্র একটি মাটির রাস্তাই ছিল তাদের ভরসা।
বন্যায় সেটি বারবারই ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় স্বাভাবিক চলাচল করাই ছিল তাদের দায়৷। এ অবস্থায় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত সষ্য পন্য, সার-বীজ সহ অন্যান্য মালামাল আনা নেয়া করতে পারতেন না । খামারে উৎপাদিত দুধ মিল কারখানায় নেয়া যেত না । কৃষকদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য হাট বাজারে নিয়ে বিক্রিও করতে পারতেন না । এতে তারা অর্থনৈতিকভাবে কষতিগ্রস্ত হতো । এ এলাকার ছেলে মেয়েদের স্কুল কলেজে যেতেও দুর্ভোগ পোহাতে হতো । এমনকি দূর্গম এলাকা হওয়ায় ছেলে মেয়েদের বিয়ে দেওয়াও দুঃস্কর ছিলো । একই চিত্র ছিল উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিঃমিঃ পশ্চিমে অবস্থিত গজাইল,খোদ্দ গজাইল, চয়ড়া, ছোট তরফ বায়রা, ভায়রা, চান্ডালগাঁতী, আলীগ্রাম ও সেনগাঁতী গ্রামের মানুষের । নীচু অঞ্চল অধ্যুষিত এসব গ্রামে যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় মানুষ যুগের পর যুগ একই রকম দূভোর্গে ছিল। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এসব এলাকার ফসলের বুক চিরে নির্মিত হয়েছে কনর্কিটের আধুনিক সাবমার্জিবল (ডুবো) পাকা সড়ক।
যেটি বন্যা মৌসুমে পানিতে তলিয়ে থাকে এবং শুকনো মৌসুমে সেখান দিয়ে আধুনিক যানবাহন চড়ে মানুষ চলাচল করে। এতে দুর হয়েছে ওই নীচু অঞ্চলের মানুষদের সব দূভোর্গ । বদলে গেছে মানুষের জীবন-যাত্রার মান । প্রত্যন্ত নীচু অঞ্চল থেকে এখন মানুষ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে চড়ে দিন রাত শহর থেকে গ্রামে, গ্রাম থেকে শহরে চলাচল করছে । কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য সহ খামারের দুধ মিল কারখায় বিক্রি করে বাড়তি আয় করতে পারছে। উপজেলার কালিয়াকৈড় গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্বা রুহুল আমিন খসরু জানান,বার্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর উল্লাপাড়ার সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম প্রধানমন্ত্রীর নিবার্চনী প্রতিশ্রুতি প্রতিটি গ্রাম হবে শহর তা বাস্তবায়নে শহর থেকে গ্রাম, গ্রাম থেকে গ্রামে উঁচু পাকা সড়ক সহ সাবমার্জিবল পাকা সড়ক নিমার্ণ করে দিয়েছেন । আমরা কখনো কল্পনাও করতে পারিনি এখানে কোনদনি রাস্তাঘাট ব্রীজ-কালভার্ট হবে । আমরা যানবাহনে যাতায়াত করতে পারবো । বর্তমান সরকার আমাদের নীচু অঞ্চলের মানুষের কষ্ট লাঘবে এমন উদ্যোগ নেয়ায় আমরা খুবই খুশি। একই ভাবে এ উপজেলায় প্রতিটি এলাকায় পরিকল্পিতভাবে নতুন নতুন রাস্তা ঘাট পাকা করণ করা হয়েছে। নদ-নদী খাল-বিলের উপর নিমর্তি হয়েছে অসংখ্যা ব্রীজ কালভার্ট। এতে মানুষের দীর্ঘদিনের দূর্দশা লাঘব হয়েছে। উল্লাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মো.মাঈন উদ্দিন জানান,উল্লাপাড়া উপজেলার সংসদ সদস্য তানভীর ইমামের সার্বিক সহযোগীতায় ও উদ্যোগে এ উপজেলায় ২০১৪ সাল থেকে অদ্যবধি ২০৮ কিঃমিঃ নতুন রাস্তা-ঘাট পাকা করণ করা হয়েছে। সংস্কার করা হয়েছে প্রায় ২ শ’কিঃমিঃ সড়ক। ১৬টি বড় ব্রীজ কালভার্ট নিমার্ণ করা হয়েছে।
এ উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে ২৫ কিঃমিঃ সাবমার্জিবল সড়ক পাকা করণ করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৩শ’৫০ কোটি টাকা। নতুন করে আরো ৩০ কিঃমিঃ সাবমার্জিবল সড়ক ও অসংখ্যা গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট,ব্রীজ-কালভার্ট বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াধীন রযেছে।
মোঃ আব্দুস ছাত্তার
উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ