সিরাজগঞ্জ সদরে একই রাতে ৩ টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করেন এসিল্যান্ড, কনের বাবা ও বরের জরিমানা ।

আজিজুর রহমান মুন্না,সিরাজগঞ্জ ঃ

সিরাজগঞ্জ সদরে একই রাতে তিনটি বাল্যবিবাহ বন্ধ করেছেন সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আনিসুর রহমান। শুক্রবার( ৫ এপ্রিল-২০১৯) বিকালে প্রথমে সিরাজগঞ্জ সদরের কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের কান্দাপাড়া এলাকার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী মোছাঃ শান্তি খাতুন (১৩), সন্ধ্যা ৭ টায় বহুলী ইউনিয়নের ডুমুর গোলামী গ্রামে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী মোছাঃ আয়েশা খাতুন (১৩) ও রাত ৯ টায় খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের খলিশাকুড়া গ্রামে দশম শ্রেণীর ছাত্রী মোছাঃ আরিফা খাতুন (১৬) এর বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়। আদালত সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিরাজগঞ্জ সদরের কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামে সংগীয় ফোর্স নিয়ে কনের বাড়ীতে উপস্থিত হন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

তখন কনের বাড়ীতে কনে কান্দাপাড়া গ্রামের আবু সাইদের মেয়ে শান্তি খাতুন (১৩) এর সাথে বর পৌরসভার রায়পুর এলাকার রফিকুল ইসলাম এর পুত্র রেজাউল করিম (৩১) এর বিয়ের আয়োজন চলছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে কাজী পালিয়ে যায়। কনে কালিয়া কান্দাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। কনে অপ্রাপ্তবয়স্ক। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বর রেজাউল করিম ও কনের বাবা আবু সাইদ প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরপর সন্ধ্যা ৭ টায় সিরাজগঞ্জ সদরের বহুলী ইউনিয়নের ডুমুর গোলামী এলাকায় অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। তখন কনের বাড়ীতে কনে ডুমুর গোলামী গ্রামের আশরাফ আলীর কন্যা আয়েশা খাতুন (১৩) এর সাথে বর রায়গঞ্জ উপজেলার বামনবাগ গ্রামের আঃ সামাদ এর পুত্র নুরনবী (২১) এর বিয়ের আয়োজন চলছিল।

কনে হরিনহাটা দাখিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বর নুরনবী ও কনের বাবা আশরাফ আলীর প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরপর রাত ৯টায় খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের খলিশাকুড়া গ্রামে অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। তখন কনে খলিশাকুড়া গ্রামের আরিফুল ইসলামের কন্যা আরিফা খাতুন (১৬) এর সাথে বালিঘুগরী গ্রামের নুরুল ইসলাম এর পুত্র সিহাব আলীর (২০) বিবাহের আয়োজন চলছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে কাজী পালিয়ে যায়। বর ও কনে উভয়ই অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়। পরে প্রত্যেক ক্ষেত্রে কনের বাবা ও বরের বাবার কাছ থেকে কনে ও বর প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ দিবেন না বলে মুচলেকা নেয়া হয়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সবুর শেখ, ইউ.পি সদস্য আরমান আলী,আনসার ব্যাটালিয়ন পি.সি নুরুল ইসলাম ও আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যবৃন্দ।