উপজেলা কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে ৪২ লক্ষ টাকা নিয়ে লাপাত্তা পিয়ন
তৌকির আহাম্মেদ হাসু, স্টাফ রিপোর্টারঃ
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা হিসাব রক্ষন কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে প্রায় ৪২ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে অফিসের আনুসাঙ্গীক প্রাতিষ্ঠানিক কর্মচারী শাকিবুল হাসান দুখুর বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর থেকেই ওই কর্মচারী লাপাত্তা রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় পৃথক দুটি সাধারন
ডায়েরী (জিডি) করা হয়েছে। সাধারন ডায়েরী (জিডি) নং-৬৫১ (তারিখ-১৭/০২/২০২১ ইং) ও ৮৯৪ (তারিখ ২৩-০২-২০২১ ইং)।
উপজেলা হিসাব রক্ষন অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ২০২০ইং সালের জুলাই মাসে সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের চর জামিরা
গ্রামের জয়নাল আবেদীনের পুত্র শাকিবুল হাসান দুখু মহাহিসাব নিয়ন্ত্রক কার্যালয় থেকে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে আনুসাঙ্গীক প্রাতিষ্ঠানিক কর্মচারী হিসেবে উপজেলা হিসাব রক্ষন কর্মকর্তার কার্যালয়ে যোগ দেন। যোগ দেওয়ার পর থেকে গত তিন বছরে চার দফায় অফিসের অডিটর অফিসার রফিকুল ইসলাম, এসএএস সুপারিনটেনডেন্ট ও হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা স্নিগ্ধ রায়হানের স্বাক্ষর জাল করে সোনালী ব্যাংক
উপজেলা কমপ্লেক্স শাখা থেকে জামানত ফান্ডের ৪১ লাখ ৯৪ হাজার ৫১২ টাকা উত্তোলন করে অফিস পিয়ন সাকিবুল হাসান দুখু। গত ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১ ইং তারিখে শাকিবুল হাসান দুখু ১৩টি বিল সমেত একটি এ্যাডভাইস যাহা অডিটর ও সুপারের স্বাক্ষরসহ উপজেলা হিসাব রক্ষন কর্মকর্তার স্বাক্ষরের
জন্য নিয়ে যায়। এ সময় হিসাব রক্ষন কর্মকর্তার নিকট ১১লক্ষ ৬৯ হাজার ৩শ
৮২ টাকার জমাকৃত বিলের টোকেন নং-০০০০৬০৬২ (তারিখ-১৬/০২/২০২১ইং)
বিলটি দেখতে চাইলে সে বিলটি নিয়ে আত্মগোপন করে। উপজেলা হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা বিলটি না পেয়ে তার খোঁজখবর করে ব্যর্থ হন। পরে উপজেলা হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা শাকিবুল হাসান দুখুর বাড়ীতে গেলে তার পিতা জয়নাল আবেদীন টাকা ফেরত দেয়ার আশ্বাস দিয়ে একটি মুচলেকা প্রদান করেন।
এ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে একইভাবে অবৈধ পন্থায় কর্মচারী শাকিবুল হাসান দুখু প্রায় ৪২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে গত বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারী) প্রাথমিক তদন্তে প্রতীয়মান হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট পত্রের মাধ্যমে অবগত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা স্নিগ্ধ রায়হান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শাকিবুল হাসান দুখু সরকারী অফিসে কর্মরত থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন পন্থায় প্রতারনার মাধ্যমে প্রায় ৪২ লক্ষ টাকা নিয়েছে। এ বিষয়টি মহা হিসাব নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পত্রের মাধ্যমে অবগত করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, শাকিবুল হাসান দুখু একটি জালিয়াতি চক্রের একজন। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ তদন্ত করলে তার বিরুদ্ধে আরোও জালিয়াতির তথ্য বের হবে আশা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক মোঃ শাহজাহান সরকার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি তদন্তনাধীন রয়েছে। তিনি আরও জানান সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।