সিরাজগঞ্জে বাল্যবিবাহর হাত থেকে রক্ষা পেল মায়া ও সুমী, অভিভাবকের অর্থদন্ড।
আজিজুর রহমান মুন্না,সিরাজগঞ্জ ঃ
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় একই রাতে দু’টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করলেন সদর এসিল্যান্ড। রতনকান্দি ইউনিয়নের একডালা পূর্বপাড়া গ্রামের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী মায়া আক্তার ও বাগবাটি ইউনিয়নের বাগবাটি পশ্চিম পাড়ার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী সুমী খাতুনকে বাল্যবিবাহর হাত থেকে রক্ষা করলেন সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আনিসুর রহমান। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ-২০১৯) সন্ধ্যায় প্রথমে সিরাজগঞ্জ সদরের রতনকান্দি ইউনিয়নের একডালা পূর্বপাড়া এলাকার ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী মোছাঃ মায়া আক্তার (১২) এবং রাত ৯ টায় বাগবাটি ইউনিয়নের বাগবাটি পশ্চিমপাড়া গ্রামে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী মোছাঃ সুমি খাতুন (১৪) এর বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিরাজগঞ্জ সদরের রতনকান্দি ইউনিয়নের একডালা পূর্বপাড়া গ্রামে সংগীয় ফোর্স নিয়ে কনের বাড়ীতে উপস্থিত হন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তখন কনের বাড়ীতে কনে একডালা এলাকার মইনুল হকের মেয়ে মায়া আক্তার (১২) এর সাথে বর ঘোড়াচড়া গ্রামের আব্দুল বারী এর পুত্র মোঃ কাউছার হোসেন (২৫) এর বিয়ের আয়োজন চলছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে কাজী ও বরপক্ষ পালিয়ে যায়। কনে ভেন্নাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী অপ্রাপ্তবয়স্ক। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বরের ফুপা মোশাররফকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরপর রাত ৯ টার সময় সিরাজগঞ্জ সদরের বাগবাটি ইউনিয়নের বাগবাটি পশ্চিমপাড়া এলাকায় অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রীর বাল্যবিবাহ বন্ধে সংগীয় ফোর্স নিয়ে কনের বাড়ীতে উপস্থিত হন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তখন কনের বাড়ীতে কনে বাগবাটি পশ্চিমপাড়া এলাকার শফিকুল ইসলামের মেয়ে সুমি খাতুন (১৪) এর সাথে বর একই উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়নের বৈদ্যধলডোব পশ্চিমপাড় গ্রামের ইসহাক আলী এর পুত্র আনোয়ার হোসেন (২৩) এর বিয়ের আয়োজন চলছিল। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কাজী কৌশলে পালিয়ে যায় । কনে স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী অপ্রাপ্তবয়স্ক। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বরের বাবা ইসহাক আলী ও কনের বাবা শফিকুল ইসলামের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে কনের বাবার কাছ থেকে কনের ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ দিবেন না বলে মুচলেকা নেয়া হয়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন পৌর ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম, সদর থানার এ এসআই রবিউল,আনসার ব্যাটালিয়ন পি.সি আমজাদ হোসেন,থানা সদর পুলিশের সদস্যবৃন্দ ও আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যবৃন্দ।