উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তাড়াশে ডাক্তার-কর্মচারীদের মনববন্ধন
তাড়াশ প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত)
ডাঃ ফরিদা ইয়াসমিনের অসদাচরণ ও দূর্ব্যবহারের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকালে এক মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে। ওই হাসপাতালের সকল ডাক্তার ও কর্মচারীরা সম্মিলিত ভাবে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে এ মানববন্ধন ও সমাবেশ করে। আধাঘন্টা ব্যাপী এ মানববন্ধন ও সমাবেশে হাসপাতালের সকল ডাক্তার-কর্মচারী অংশ নিয়ে এ প্রতিবাদ জানায়।
এ মানববন্ধন চলাকালে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন,তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডাঃ শিমুল তালুকদার, ডাঃ আব্দুর রাজ্জাক, ডাঃ মিজানুর রহমান, সার্জারী কনসালট্যান্ট ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান প্রমূখ। এ সময় বক্তারা বলেন, কোন রকমের যৌক্তিক কারণ ছাড়াই ডা.ফরিদা ইয়াসমিন সকল ডাক্তার ও কর্মচারীদের সাথে প্রায়ই অসদাচরণ ও চরম দূর্ব্যবহার করে থাকেন। তার দূর্ব্যব্যহার সইতে না পেরে ইতোমধ্যে তিন জন ডাক্তার এ হাসপাতাল থেকে সইচ্ছায় বদলি নিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। এছাড়া আরও কয়েকজন বদলির জন্য আবেদন করেছেন। অনুমদন হলে তারাও চলে যাবেন।এ অবস্থায় হাসপাতালটির চিকিৎসা সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে আমরা আজ পথে নেমে এ আন্দলন করতে বাধ্য হয়েছি।
তারা আরো বলেন,তিনি নিয়ম বহির্ভূতভাবে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক সারা বাংলাদেশের ডাক্তারদের পদন্নতির জন্য এ বছর মে মাসের ১৯ তারিখে চিঠি দেওয়া হয়। স্বারক: উএঐঝ/ পার-তথ্য ১১/৪৯/২১/১৯। অথচ তিনি ওই তারিখেই স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। আর কথায়-কথায় তিনি সবাইকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভয় দেখান। তার দূর্ব্যবহারের প্রতিবাদ করলে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে তাদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ারও হুমকী দেন। ডাক্তাররা আরো বলেন, তার কোন মানসিক রোগ আছে কি না তার চিকিৎসা হওয়া প্রয়োজন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র নার্স ষ্টাফ তাহিরা খাতুন, লায়লা সুলতানা, আঞ্জুয়ারা খাতুন, সুচিত্রা রাণী শীল প্রমূখ অভিযোগ কওে বলেন, তাদের সাথে তিনি প্রায় সারাক্ষণ অমানবিক আচারণ করেন। তাদের সবাইকে তিনি বলেন, যাদের চতুর্থ শ্রেণিরও কর্মচারী হওয়ার যোগ্যতা নেই, তারা আবার দ্বিতীয় শ্রেণিতে চাকরি করছেন। আপনারা সবাই অসদুপায় ব্যবহার করে চাকরি নিয়েছেন। আপনাদের সন্তানরাও মানুষ হবেনা। সব কুলাঙ্গার হবে। তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুইজন ড্রাইভার আব্দুল মোমেন সরকার ও নিরব মিয়া বলেন, তাদের চা পানের কাপ-প্রিজ দিয়ে পর্যন্ত ঢিল ছুড়ে মারা হয়েছে। ড্রাইভার আব্দুল মোমেন সরকার আরো বলেন,এ হাসপাতালে আমি ২৭ বছর ধরে চাকরি করি। কখনো কারো সাথে কোন দিনও আমার কোনরূপ মনমালিন্য হয়নি। অথচ ডা.ফরিদা ইয়াসমিন প্রায়ই আমার সাথে অকারণে দূর্ব্যবহার করেন। তার এ দূর্ব্যবহার সইতে না পেরে অন্যত্র বদলির জন্য আবেদন করেছি। অনুমদন হলে এখান থেকে চলে যাব।
এ মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন, মেডিকেল এসিটেন্ট, মাজেদুল ইসরাম, অফিস সহকারী
বাবুল হোসেন, কেশিয়ার আব্দুল মান্নান, স্টোর কিপার শাহাদত হোসেন, ওয়ার্ড বয় মোতালিব
হোসেন, নাইড গার্ড ঘোরা চাদ মিয়া, ঝাড়–দার অর্চনা, সুইপার বাসন্তী রানী প্রমূখ।এদেরও অভিযোগ, তাদেও সাথেও তিনি প্রতিনিয়ত দূর্বব্যবহার করে থাকেন।
এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ফরিদা ইয়াসমিন সাংবাদিকদের বলেন, তিনি কখনোই কারো সাথে কোন রকম দূর্ব্যবহার করেন না।
এ বিষয়ে কেউ কোন প্রমাণও দিতে পারবেন না। তারপরেও কেনো তারা এ কাজ করল তা খতিয়ে
দেখব।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যেই বিষয়টি
আমি জেনেছি। খুব দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।