সরিষাবাড়ীতে উত্যক্ত করায় সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী অন্তরার আত্মহত্যা

তৌকির আহাম্মেদ হাসু, সরিষাবাড়ী (জামালপুর)প্রতিনিধি ঃ

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে বকাটে ছেলের উত্যক্ত কারনে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী অন্তরা সাহা (১৫) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের সাঞ্চেরপাড় গ্রামে তার নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ব্যবসায়ী নারায়ণ চন্দ্র সাহার মেয়ে। পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেছে। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের সাঞ্চেরপাড় গ্রামের ব্যবসায়ী নারায়ণ চন্দ্র সাহার মেয়ে।তার মেয়ে পৌরসভা এলাকার সালেমা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী অন্তরা সাহা। গতকাল সোমবার সন্ধ্যার দিকে সরিষাবাড়ী আরামনগর বাজারের একটি কোচিং সেন্টার থেকে অন্তরা সাহা কোচিং শেষে করে বাড়ীতে যায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তার মা নমিতা রাণী সাহা তাকে না পেয়ে ঘরে খুঁজতে যান। অন্তরা সাহার রুমের দরজা বন্ধ দেখে তাকে তার মা তাকে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কোনো সাড়া না পেয়ে বাড়ীর লোকজন দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকেই অন্তরাকে ঘরের ধর্ণার সাথে ঝুলন্ত দেখতে পান। পরে পরিবারের লোকজন তাকে দ্রুত সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. সাহেদুর রহমান তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাহেদুর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালে আনার আগেই মেয়েটি মারা গেছে।’ ওই ছাত্রীর শোকার্ত বাবা নারায়ণ চন্দ্র সাহা অভিযোগ করে বলেন, ‘সরিষাবাড়ী পৌরসভার মূলবাড়ি এলাকার মতি তালুকদারের ছেলে তানিন তালুকদার আমার মেয়েকে পঞ্চম শ্রেণি থেকে উত্যক্ত করে আসছে। তানিনকে এবং তার বাবা-মাকে অনেক বলেছি। কোনো লাভ হয়নি। ২০ এপ্রিল বাড়ী থেকে কোচিংয়ে যাওয়ার পথে অন্তরার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে মুখচেপে ধরে তানিন তার মোবাইলে সেলফি তুলে তার ফেসবুকে পোস্ট দেয়।ফেসবুকে ছবি দেওয়ার পর থেকেই আমার মেয়ে মানসিক অশান্তিতে ভুগছিলো। ওই বিষয়টি অন্তরা আমাদের জানালে তানিনের বাবা-মাকে জানানো হয়। কিন্তু এতেও তারা কোনো গুরুত্ব দেয়নি। পরে তানিন তালুকদার তার বাবা মা’র কাছে বিচারের কথা শুনে সে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে গুলি করে মারার হুমকি ও দোকান ভাঙচুর করবে বলে। এদিকে খবর পেয়ে সোমবার রাতে সরিষাবাড়ী থানার (ওসি) মো. মাজেদুর রহমান ও উপ-পরিদর্শক (এস আই) মো. আশরাফুল আলম সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে মেয়েটির সুরতহাল লেখেন। পরে রাত পৌনে ১১টার দিকে অন্তরার মরদেহ থানায় নিয়ে যান। সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজেদুর রহমান বলেন, ‘অন্তরা সাহার মরদেহ থানায় আনা হয়েছে। ২৩ এপ্রিল সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ জামালপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। মৃতের পরিবারের অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।