লাথি মেরে অন্তঃস্বত্বা স্ত্রীর গর্ভের সন্তান হত্যার অভিযোগ কামারখন্দে

আমিরুল ইসলাম, কামারখন্দ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে ওষুধে কাজ না হওয়ায় পেটে লাথি মেরে চার মাসের অন্তঃস্বত্বা এক গৃহবধুর গর্ভের সন্তান হত্যা করেছে তার স্বামী।

নির্যাতিতা গৃহবধু শাহিদা খাতুন (১৮) উপজেলার পাইকোশা গ্রামের রুবেল হোসেনের স্ত্রী ও কর্ণসূতি উত্তরপাড়া গ্রামের দিনমজুর শাহাদতের মেয়ে।

নির্যাতিতা গৃহবধু শাহিদা খাতুন বলেন, বিয়ের পর থেকে আমার স্বামী কোন কাজ না করায় শাশুড়ি আমাকে দিয়ে সূতার কাজ করায়। যে টাকা পারিশ্রমিক পাওয়া যায় সব টাকা সে নিয়ে নেয়। আমার স্বামী কোন কাজ না করায় সব কষ্ট মুখ বুঝে সহ্য করে এসেছি, কখনও বাবার পরিবারকে জানায়নি। এরই মধ্যে আমার গর্ভের চার মাসের সন্তানকে হত্যা করতে গত শুক্রবার আমার স্বামী ও শাশুড়ির যোগসাজসে কি যেন ওষুধ খাইয়ে দেয়। শুধু রক্তক্ষরণ বাদে গর্ভের সন্তান মরে না যাওয়ায় ওষুধ খাওয়ানোর দুইদিন পর গত রবিবার বিকেলে আমার পেটে ও কোমরে বেশ কয়েকবার লাথি মারে। এতে আমি অচেতন হয়ে পড়ি। পরে আমার গর্ভে থাকা চার মাসের পুত্র সন্তানের অকাল গর্ভপাত ঘটে।

গৃহবধু শাহিদার বাবা শাহাদত হোসেন জানান, গত তিন বছর আগে পাইকোশা গ্রামের সুরুতের ছেলে রুবেলের সঙ্গে বিয়ে দেই শাহিদার। বিয়ের পর থেকে শাহিদার স্বামী কোন কাজ না করায় তার শাশুড়ি রুবেলকে কিছু না বলে শাহিদাকে নির্যাতন করে আসছে। গত রবিবার শাহিদার শাশুড়ী ও স্বামী মিলে তার পেটের বাচ্চাটা মেরে ফেলেছে অভিযোগ রয়েছে। মঙ্গলবার অস্বাভাবিক নির্যাতনের পর শুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আমার মেয়েকে বাড়ীতে রাখতে আসেন মেয়ের ভাসুর ও খালু শশুর। পরে বুধবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে জেলা সদরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন চিকিৎসক।

গৃহবধু শাহিদার ভাসুর সানোয়ার হোসেন জানান, শাহিদাকে জ্বর-সর্দির ওষুধ খাওয়ানোর কারণে তার গর্ভপাত হয়েছে। পেটে লাথি মারার কারণে তার গর্ভপাত ঘটেনি। তবে আমার ভাই শাহিদাকে আঘাত করে কাজটা ঠিক করেনি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত ডা. তাজলিনা জানান, মুলত কি কারণে গৃহবধু শাহিদার গর্ভপাত হয়েছে সেটি আসলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বোঝা যাবে। তবে পেটে আঘাতের কারণেও গর্ভপাত হতে পারে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি না থাকায় তাকে জেলা সদরে রেফার্ড করা হয়েছে।

কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুল্লাহ জানান, এঘটনায় থানায় কেউ আসেনি। আসলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আমিরুল ইসলাম
কামারখন্দ উপজেলা, সিরাজগঞ্জ

১৭/৮/২০২২