কুটিরচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইফুল ২ শিশুকে বলাৎকার করলেন

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে ৩য় শ্রেণীর ২ শিশু ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে কুটিরচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমানের চাচাতো ভাই ওই স্কুলের শিক্ষক সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ধামা-চাপা দিতে নির্যাতিত শিশুদের পরিবারকে প্রাণ নাশের হুমকি। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর গাঢাকা দিয়েছেন ওই শিক্ষক। কামারখন্দ উপজেলার কুটিরচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার শিশুদের পরিবার ভদ্রঘাট ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমানের কাছে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবি করেন। তখন স্কুলের কর্তৃপক্ষ ও ম্যানেজিং কমিটি আইনের শরণাপন্ন না হয়ে নির্যাতনের শিশুর পরিবারকে ভয়ভীতি ও প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকালে সরেজমিন ওই স্কুলে গিয়ে সাইফুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি। তবে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সিওয়াতুন নেছা বলেন, আমরা ওই ছাত্রদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি। তারা আমাদের কাছে সব বর্ণনা করেছে। ঘটনাটি নিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমানসহ এলাকার আরও কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তি স্কুলে এ বিষয়ে মিটিং করেছেন। ঘটনার শিকার শিশু ছাত্র ও তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ৩/৪ মাস ধরে স্কুল শিক্ষক সাইফুল ইসলাম ৯ থেকে ১২ বছর বয়সের ২ ছাত্রকে কৌশলে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক বলাৎকার করেন। আর ছাত্রদের এ ঘটনা কাউকে বলতে নিষেধ করেন। তোরা কাউকে কিছু জানালে তাদের মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়। শিশুরা ছোট হওয়ায় ভয়ে অভিভাবকের কাছে প্রকাশ করার সাহস পায়নি। গত জানুয়ারী স্কুলের ছাত্রদের নিয়ে পাবনায় স্কাউটে যায় ১০ জন ছাত্র। সেখানে গিয়ে নির্যাতনের শিকার ১০ বছরের এক ছাত্র গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ওখানে প্রাথমিক চিকিৎসা করে শিক্ষক সাইফুল ইসলাম। অপর এক ছাত্র জানায়, তাকে বলাৎকার করতে না দিলে বিদ্যুতের তার দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছিল। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা বলেন, আমরা জানি শিক্ষকেরা মানুষ গড়ার কারিগড়। এই মহত কাজে থেকে কিভাবে এধরনের কাজ হচ্ছে। কারণ স্কুলের সভাপতি আব্দুর রহমানের ২ ভাই ও ২ বোন স্কুলের শিক্ষক হওয়াতে বিষয়টি সভাপতি আমলে না নিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। তাই আমরা এই সকল জঙ্গনতম শিক্ষকের হাত থেকে কমলমতি শিক্ষার্থীদের বাচান। নাইলে এই স্কুলে কোন অভিভাবকেরা তাদের নিষ্পাপ ছেলে-মেয়েদের লেখাপাড়াতে আসতে দেবে না। এ বিষয়ে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, সামাজিক মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে আমরা বিষয়টি সমাধানের জন্য বসেছিলাম। কিন্তু অভিযুক্ত শিক্ষক পলাতক থাকায় সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ভদ্রঘাট ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বলেন, বিষয়টি জানতে পারি শিক্ষকের দ্বারা কয়েকজন ছাত্র নির্যাতনের শিকার হয়েছে। কিন্তু অভিযুক্ত শিক্ষক পলাতক থাকায় তাকে হাজির করার জন্য তার পরিবারের উপর চাপ দিয়েছি। এখনো বিষয়টি থানায় জানানো হয়নি। কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনাটি আমার জানা নেই। এমনকি কেউ অভিযোগ করেনি। বিষয়টির খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।