উল্লাপাড়ায় পানি বেড় হওয়ার দুটি নালা মাটি ভরাট করে বন্ধ করায় ৬টি মৌজায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি
উল্লাপাড়া প্রতিনিধিঃ মোঃ আব্দুস সাত্তার
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মাঠ থেকে পানি নষ্কাশনের সরকারী দুটি নালার মুখ মাটি ভরাট করে বন্ধ করে দেওয়ায় ছয়টি মৌজার ৫ হাজার একর জমিতে জলাবদ্ধতার কারণে রবিসষ্য চাষ করতে পারছেনা কৃষক । নালা দুটি হচ্ছে উপজেলার কয়ড়া ইউনিয়নের চরপাড়া কবর স্থান সংলগ্ন নালা ও রিয়া-রুপম পার্কের উত্তরে ভেংড়ী মৌজায় আসান ধর নালা । ওই দুটি নালা দিয়ে বর্ষা ও বৃষ্টির পানি বিলসূর্য(কচুয়া) নদীতে নেমে যায় ।
ওই দুটি নালা দিয়ে পাশাপাশি তিনটি ইউনিয়নের ছয়টি মৌজার ৫ হাজার একর কৃষি জমির পানি নিষ্কাশন হয় । ছয়টি মৌজার মধ্যে উল্লাপাড়া সদর ইউনিয়নের মধ্যে – বাখুয়া, পংরৌহা, ভদ্রকোল, ও নাগরৌহা মৌজা, কয়ড়া ইউনিয়নের মধ্যে- চড়ইমুড়ি মৌজা এবং পূর্ণিমাগাঁতী ইউনিয়নের মধ্যে- ভেংড়ী মৌজা রয়েছে ।
স্বাভাবিক বর্ষা হলেই মৌজাগুলোর বেশীর ভাগ চাষযোগ্য জমি পানিতে তলিয়ে যায় বিলসূর্য(কচুয়া) নদীর শাখা বুড়ির বিল ও আসান ধর নালা হয়ে মৌজাগুলোয় পানি ঢোকে ও পরে বের হয়ে যায় । ওই দুটি নালার মধ্যে বুড়ির বিল সরকারী ও আসান ধর নালা মালিকানাধীন । এদিকে প্রায় বিশ বছর আগে ভেংড়ী মৌজায় বিলসূর্য(কচুয়া) নদী থেকে প্রায় ৫ শ ফুট দীর্ঘ একটি খাল স্থানীয় এক ইটভাটা মালিক নিজ উদ্যোগ ও অর্থে খনন করেন । তিনি জমি ভাড়া নিয়ে নিজ ব্যবসার সুবিধায় খালটি খনন করেছিলেন । বুড়ির বিল ও আসান ধর নালা হয়ে পানি নিষ্কাশন হতো। গত প্রায় দু’বছর আগে আসান ধর নালাটি জমির মালিক ভরাট করেছেন। পানি নিষ্কাশনের এক মাত্র পথ ছিলো সরকারী বুড়ির বিল নালা । গত বর্ষা মৌসুমের পর চরপাড়া গ্রামের কবরস্থানের কাছে বুড়ির বিল নালার এক অংশ আড়া-আড়িভাবে মাটি ফেলে ভরাট করে মাঠ বানানো হয়েছে । চরপাড়া কবরস্থান কমিটি নালাটি এভাবে ভরাট করেছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে , বুড়ির বিল নালা হয়েই আদি কাল থেকেই মৌজাগুলোর পানি নিষ্কাশন হয়। প্রায় একশো ফুট চওড়া নালাটির প্রায় এক বিঘা পরিমাণ আড়া-আড়িভাবে মাটি ফেলে ভরাট করা হয়েছে ।
চরপাড়া কবরস্থান কমিটির সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম জানান নালাটি সরকারী হলেও তাদের দরকারে ভরাট করে মাঠ বানিয়েছেন। পানি নিষ্কাশনে বাধা হলে সেখানকার মাটি সরিয়ে ফেলা কিংবা পাইপ বসিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দেবেন।
নাগরৌহা গ্রামের কৃষক আঃ কাদের , ছাইদুর রহমান বলেন নালাটি ভরাট করে পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ আটকে দেওয়া হয়েছে। চলতি সরিষা চাষের মৌসুম চলে এলোও জমিগুলোয় পানি জমে থাকায় সরিষা চাষ না হওয়ার আশংকা করছেন ।
কৃষক করিম মিয়ার ধারণা নীচু জমিগুলো তো থাকবেই কার্তিক মাসে ভারী বৃষ্টি হলে উচু জমিগুলোয় পানি জমবে ।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান পান্না বলেন বিষয়টি দেখে ও জেনে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সূবর্ণা ইয়াসমিন সুমী জানান , সরকারী নালা হয়ে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা কোনোভাবেই আটকানো যাবে না। তার বিভাগ থেকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা ব্যবস্থা নিবেন ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেওয়ান মওদুদ আহমেদ বলেন সরকারী নালা ভরাট করে পানি নিষ্কাশন পথ আটকে দেওয়ার বিষয়টি সরেজমিনে দেখে উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।