সিরাজগঞ্জ সদরে ৩স্কুলছাত্রীকে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা করলেন এসিল্যান্ড অভিভাবকদের জরিমানা ।

আজিজুর রহমান মুন্না, সিরাজগঞ্জ ঃ

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় একই দিনে ৩টি স্কুল ছাত্রীকে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা করেছেন সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আনিসুর রহমান। বুধবার রাতে প্রথমে সিরাজগঞ্জ সদরের রতনকান্দি ইউনিয়নের মহিষামূড়া গ্রামের নবম শ্রেণীর ছাত্রী মোছাঃ সম্পা খাতুন (১৪),রাত ৯ টায় রতনকান্দি ইউনিয়নের একডালা গ্রামে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী মোছাঃ মিম খাতুন (১২) ও রাত ১১ টায় কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের তেতুলিয়া গ্রামে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী মোছাঃ স্বপ্না খাতুন (১৩) এর বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়। আদালত সূত্রে জানা যায়,বুধবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিরাজগঞ্জ সদরের রতনকান্দি ইউনিয়নের মহিষামূড়া গ্রামে সংগীয় ফোর্স নিয়ে কনের বাড়ীতে উপস্থিত হন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তখন কনের বাড়ীতে কনে মহিষামূড়া গ্রামের হাসেন আলীর মেয়ে সম্পা খাতুন (১৫) এর সাথে বর ঢাকার মিরপুর এলাকার রফিকুল ইসলামের পুত্র সেলিম (২৫) এর বিয়ের আয়োজন চলছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে বর ও কাজী পালিয়ে যায়। কনে স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। কনে অপ্রাপ্তবয়স্ক। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দিয়ে কনের বাবার কাছ থেকে মেয়ের ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দিবে না বলে মুচলেকা নেন। এরপর রাত ৯ টায় সিরাজগঞ্জ সদরের রতনকান্দি ইউনিয়নের একডালা এলাকায় অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। তখন কনের বাড়ীতে কনে একডালা গ্রামের সাইফুল ইসলাম কন্যা মিম খাতুন (১২) এর সাথে বর একই উপজেলার একই গ্রামের মৃত নুরুল হক এর পুত্র আঃ রাজ্জাক (৩০) এর বিয়ের আয়োজন চলছিল। কনে স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দিয়ে কনের বাবা সাইফুল ইসলাম ও বরের বোন নাজমা খাতুন প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরপর রাত ১১টায় কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের তেতুলিয়া গ্রামে অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। তখন কনে পৌর এলাকার গয়লা গ্রামের হযরত আলীর এর কন্যা স্বপ্না খাতুন (১৩) এর সাথে তেতুলিয়া গ্রামের দেলবার শেখ এর পুত্র সাগর শেখ এর (১৬) বিবাহের আয়োজন বরের বাড়ীতে চলছিল। কনে স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী। বর ও কনে উভয়ই অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়। পরে কনের মা ও বরের বাবার কাছ থেকে কনে ও বর প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ দিবেন না বলে মুচলেকা নেয়া হয়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আরিফুর রহমান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অনিন্দ্য গুহ,পৌর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম, আনসার ব্যাটালিয়ন পি.সি নুরুল ইসলাম ও আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যবৃন্দ।