জাতীয়

সাঁতার কাটতে গিয়ে নিখোঁজ রুয়েট শিক্ষার্থীর ২৭ঘন্টা পর লাশ উদ্ধার


নওগাঁ প্রতিনিধি: সানাউল হক

নওগাঁয় নদীতে সাঁতার কাটতে গিয়ে শাফি মাহমুদ রিফাত (২১) নামে এক রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষার্থী নিখোঁজের ২৭ ঘন্টা পর ভাসমান লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেল সোয়া তিনটার দিকে নওগাঁ সরকারি ডিগ্রী কলেজের ডিগ্রীর মোড় খেয়া ঘাট থেকে লাশ করা হয়। এরআগে বৃহস্পতিবার ১টার দিকে নওগাঁ ছোট যমুনা নীতে সাঁতার কাটতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। তাকে উদ্ধার করতে নওগাঁ ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এবং রাজশাহী থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবরি দল কাজ করে। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত কোন সন্ধান না পেয়ে উদ্ধার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।

শুক্রবার সকাল থেকে পুনরায় উদ্ধার অভিযান শুরু হলেও বিকেল সোয়া তিনটার দিকে সন্ধান মিলে। রিফাত নওগাঁ শহরের কুমাইগাড়ী মহল্লার দেওয়ানপাড়ার সিরাজুল ইসলামের ছেলে এবং ত্রিপলইর ৪র্থ বর্ষের ছাত্র। নওগাঁ-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন, জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান ও পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন পিপিএম শোকসন্তপ পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈদের ছুটিতে রিফাত হোসাইন বাড়িতে আসে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ক্রিকেট খেলার পর রিফাত ও তার চাচাতো ভাই উল্লাসকে নিয়ে নওগাঁ সরকারি ডিগ্রী কলেজের ডিগ্রীর মোড় শিশু হাসপাতালের পিছনে ুপুর ১টার দিকে ছোট যমুনা নীতে সাঁতার কাটছিল। এসময় তারা নদীর ক্ষিণ পার্শ থেকে সাঁতার কেটে উত্তর পাড়ে যাচ্ছিল। সাঁতরিয়ে উল্লাস নী পার হলেও পাড়ে পৌছার ৫/৭ ফুট ূরেূর্বল হয়ে রিফাত পানিতে ডুবে যায়। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। স্থানীয় ১৫/২০ জন লোক পানিতে নেমে রিফাতকে খুঁজতে থাকে। এছাড়া জাল দিয়ে টেনেও কোন সন্ধান করতে পারেনি। পরে নওগাঁ ফায়ার সার্ভিসের ুইটি ইউনিট গিয়ে সেখানে খুঁজতে থাকে। অবশেষে বিকেল ৩টার দিকে রাজশাহী ডুবরি এসে খুঁজতে থাকে। তবে রিফাতের কোন সন্ধান মিলেনি। ঘটনাস্থল থেকে শুরু করে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত খোঁজা হয়। এরপর সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত কোন সন্ধান না পেয়ে উদ্ধার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। শুক্রবার সকাল থেকে আবারও উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়। নিখোঁজের ২৭ ঘন্টা পর শুক্রবার বিকেল সোয়া তিনটার দিকে নওগাঁ সরকারি ডিগ্রী কলেজের ডিগ্রীর মোড় খেয়া ঘাটের পাশ থেকে ভাসমান লাশ উদ্ধার করা হয়। এসময় নীর দুই তীরে শত শত নারী-পুরুষ জমায়েত হয়।

অত্যন্ত মেধাবী হওয়ায় চরম ারিদ্রতা সত্বেও তার বাবা খুব কষ্ট করে ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার খরচ যুগিয়ে যাচ্ছেন। প্রত্যাশা একটিই যে ছেলে একনি ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বাবার মুখ উজ্জলসহ সংসারের অভাব দুর করবে। একটি সোনালী স্বপ্নের জাল বুনে চলেছিলেন তার বাবা। কিন্ত ছোট যমুনার রুপালী জলে ডুবে সে স্বপ্ন আর প্রত্যাশার সলিল সমাধি ঘটেছে।

নওগাঁ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র ম্যানেজার সাবের আলী বলেন, উদ্ধারে নওগাঁ স্টেশনের ৫ জন এবং রাজশাহী থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবরি দুইজনসহ পাঁচজন কাজ করছেন। যেখানে ডুবে গেছে সেখানে অনেক খোঁজাখুজি করে না পেয়ে অবস্থান পরিবর্তন করে এর আশপাশে খোঁজা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধা ৭ টা পর্যন্ত খুঁজে না পেয়ে উদ্ধার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। এরপর শুক্রবার সকাল ৮ টা থেকে স্থান পরিবর্তন করে খোঁজা হয়। অবশেষে বিকেল তিনটার দিকে নওগাঁ সরকারি ডিগ্রী কলেজের ডিগ্রীর মোড় খেয়া ঘাটের পাশ থেকে ভাসমান লাশ উদ্ধার করা হয়।